ঈদের পর ঢাকায় গণপরিবহনে টিকিট বাধ্যতামূলক করার কথা জানালেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র গণপরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরানো সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক সাঈদ খোকন। সোমবার নগরভবনে সমন্বয় কমিটির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে মেয়র বলেছেন, রাজধানীর কোনো বাস কোম্পানি টিকিট ছাড়া যাত্রী ওঠানামা কিংবা চলাচল করাতে পারবে না। এ পদ্ধতি কার্যকরে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ঢাকা শহরে কোথাও টিকিট ছাড়া গণপরিবহনে যাত্রী চলাচল করতে পারবেন না। এতে যাত্রী দুর্ভোগ কমে যাবে। এটা করতে আন্তঃসংস্থাগুলো এবং পরিবহন মালিকদের সমন্বয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া টিকিট কাউন্টার স্থাপনে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আজকের সমন্বয় সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী ২৭ মে রাজধানীর উত্তরায় চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু হবে। এরইমধ্যে ধানমণ্ডিতে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। উত্তরায় এ সার্ভিস চালুর পর মতিঝিল ও সদরঘাট এলাকায়ও চালু করা হবে। এসব এলাকায় রিকশাসহ যেসব পরিবহন যানজট সৃষ্টি করে সেগুলো অপসারণ হয়ে যাবে। এছাড়াও সমন্বয় সভায়, রাজধানীতে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পর্যায়ক্রমে রিকশা তুলে দেয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো সংক্রান্ত কমিটির সদস্য খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বৈঠকে বলেন, কমিটির মূল উদ্দেশ্য রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন বাস্তবায়ন করা। কিন্তু সেটা না করে, ছোটখাটো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মূল কার্যক্রম বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের শেষের দিকে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ উদ্যোগ নেন।
 বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে ১৬টি সুপারিশ করেন। ওই সুপারিশগুলো গ্রহণ করে পরিবহন মালিকরা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন যে, বিশ্বের উন্নত দেশের পরিবহন ব্যবস্থাপনার আদলে রাজধানী ঢাকায়ও ‘বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন ও কোম্পানিভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থাপনা’ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন তারা। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে নগরীর ২৫০টি রুট নেমে আসবে ২২টিতে। ৩০০টি বাস কোম্পানি রূপান্তরিত হবে ৬টিতে। মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন এ উদ্যোগ থমকে ছিল। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে আহ্বায়ক করে কমিটি করা হয়। কমিটি ইতিমধ্যে ৯টি সভা করেছে। কমিটি ইতিমধ্যে ধানমণ্ডি-নিউমার্কেট-আজিমপুর রুট ও এয়ারপোর্ট থেকে গুলিস্তান রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করেছে। আগামী ২৭ মে উত্তরা মডেল আবাসিক এলাকায় চালু হচ্ছে চক্রাকার বাস সার্ভিস। ঈদের পর পুরান ঢাকা ও মতিঝিলে চালু হবে চক্রাকার বাস।

Post a Comment

Previous Post Next Post