মুরগির শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক, মারাত্মক ঝুঁকিতে মানুষ : মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই। অথচ প্রতিদিন সকালে দেশের বিভিন্ন খামারে প্রায় ১৫-২০ কোটি মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হচ্ছে। 
মুরগি যাতে নিরাপদে থাকে সেজন্য তার শরীরে এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। পানি ও খাবারের মাধ্যমে মুরগির শরীরে এসব অ্যান্টিবায়োটিক ঢুকছে। মুরগির শরীর থেকে বিষ্ঠার মাধ্যমে মাটি ও পানিতে সেই অ্যান্টিবায়োটিক যাচ্ছে। সেখান থেকে মানুষের শরীরে আক্রমণকারী ব্যাকটেরিয়ার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।

এভাবে মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানোর মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যাকটেরিয়াগুলো পরবর্তীতে যখন মানুষকে আক্রমণ করছে, তখন ওই ওষুধ এবং ওই ওষুধের মতো অন্যান্য ওষুধ আর কাজ করছে না। এটা একটা ভয়ঙ্কর চিত্র।
এ ছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো মুরগি খেলেও মানবদেহ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। শিশু থেকে শুরু করে সবাই এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হতে পারে। যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। তাই এ ক্ষেত্রে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু শনিবার যুগান্তরকে এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী অবস্থা থেকে দেশকে ও দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হলে অবশ্যই নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা বন্ধ করতে হবে। জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সব ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের প্যাকেট লাল রঙের করা যেতে পারে। যাতে করে প্যাকেট দেখেই সবাই বুঝতে পারে এটা অ্যান্টিবায়োটিক। এটি ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কেনা বা বিক্রি নিষিদ্ধ। এ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের প্যাকেটে কমপক্ষে ততগুলো ওষুধ রাখতে হবে যাতে একটি কোর্স সম্পন্ন হয়। তাহলেও অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স এড়ানো সম্ভব।
তিনি বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, যিনি রেজিসটেন্স হলেন, তিনি যেখানেই থাকুন, চলাফেরা তো করছে। সেই সঙ্গে ব্যাকটেরিয়াও চলাফেরা করছে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হওয়া এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মহাআতঙ্কের নাম। অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের কারণে তার কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে এবং রেজিসটেন্স তৈরি হচ্ছে। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, যারা মৃত্যুবরণ করছে, তাদের শরীরে পাওয়া ব্যাকটেরিয়াগুলোর ৭০-৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স থেকে। এটা আমাদের জন্য ভয়ঙ্কর তথ্য। যা থেকে সহজেই প্রতীয়মান হয়, সারা দেশজুড়েই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্সের অবস্থা খুবই খারাপ। গত ১৫ বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, দেশের অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে আসছে। যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ৫-১০ বছর আগে খুবই কার্যকর ছিল, সেগুলোর প্রায় কোনোটিই এখন আর তেমন কার্যকর নয়।
Clue is here just click 

Post a Comment

Previous Post Next Post