নিয়মিত বাজার তদারকির ছয় মাসের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ঢাকা শহরের প্রায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।


বাংলাদেশের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, ঢাকার ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করা হয়। তবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে এটি 'বাস্তবতা বিবর্জিত' তথ্য।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, গত ছয় মাসে সংস্থার নিয়মিত বাজার অভিযানে যেসব ফার্মেসি বা ওষুধ বিক্রির দোকান পরিদর্শন করা হয়েছে তাতে ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতেই তারা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পেয়েছেন।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, তিনি নিজেসহ কয়েকজন কর্মকর্তা মনিটরিং টিমগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন। বলেন, ‘প্রতিদিন আমাদের তিনটি টিম বাজার পরিদর্শনে গিয়েছি। গত ছয় মাসের চিত্র এটি যে যেসব এলাকায় আমরা কাজ করেছি বিশেষ করে ফার্মেসিগুলোকে সেখানে প্রায় প্রতিটিতেই কিছু না কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ আমরা পেয়েছি। আর এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’

শাহরিয়ার বলেন, বিষয়টি নিয়ে তারা এখন ঔষধ ব্যবসায়ী অর্থাৎ ফার্মেসি মালিকদের সাথে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

‘আসলে বিষয়টি বোঝানো গেলে এ সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। অনেক জায়গাতেই মালিকরা সহায়তা করছেন। থানা ও জেলা পর্যায়েও কর্মকর্তাদের ব্যবসায়ী বা মালিকদের সাথে সরাসরি কাজ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে ফার্মেসির সংখ্যা এক লাখ ২৪ হাজারের মতো। তবে এসব লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের বাইরেও ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হয় কয়েক হাজার ফার্মেসি। সাধারণত ফার্মেসিকে লাইসেন্স দেয়া বা কোনো অনিয়ম পেলে লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা আছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের।

মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলছেন, অভিযানের সময় মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পাওয়া গেলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারাদণ্ড দেয়া ছাড়া আর সব পদক্ষেপই নিতে পারেন।

‘সব ধরনের জরিমানা ছাড়াও প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিলের জন্য আমরা (ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর)-কে বলতে পারি আইন অনুযায়ী। সাম্প্রতিক সময়ে একটি ফার্মেসি আমরা তাৎক্ষণিক বন্ধও করে দিয়েছি।’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ মার্চ তারা শাহজাহানপুর ও ধানমন্ডিতে দুটি ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ পেয়ে জরিমানা করেছেন ৫০ হাজার টাকা করে।

বনানীতে একটি ফার্মেসিকেও জরিমানা করা হয়েছে গত ১১ মার্চ। আবার ১২ মার্চ ক্ষিলক্ষেতের একটি ফার্মেসি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এর বাইরেও শ্যামলী, মুগদাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় নিয়মিত অভিযানে বেশ কিছু ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post